Posts

Showing posts from June, 2020

আমার  36 চৌরঙ্গী লেন

Image
        তিন তিনটে বছর, 1096 টা দিন কাটিয়ে ফেললাম আমার এই 36 চৌরঙ্গী লেনে। হ‍্যাঁ, 36 চৌরঙ্গী লেন'ই  বটে, বাড়ির নম্বরটা 36, আর রাস্তার নামে কি আসে যায়। আর তিন বছরের হিসাবটাও কিন্তু লিপইয়ার সমেত, তাই একটা দিন বেশি। কি আছে আমার এই 36 চৌরঙ্গী লেন-এ; ওটাই যে আমার ঠিকানা, আমার বাড়ি। না সে অর্থে আমার বাড়িতে তেমন কোনো গুপ্তধন নেই, নেই কোনো দামি  আসবাবপত্র  বা দামি  কোনো বিলাসসামগ্রী। তবে আছে এর থেকেও দামি কিছু স্মৃতি, কিছু সময়, অনেকটা ভালোবাসা; যেখানে  নেই কোনো ফাঁকি, আছে শুধু অনেকখানি যত্ন আর আন্তরিকতা দিয়ে গড়ে তোলা কিছু মুহূর্ত। রাস্তার  সবুজ গাছের  সারি           আমিই এই বাড়িটা প্রথম দেখি এক বৃষ্টিস্নাত দিনে। বেশ লেগেছিল বাড়ির সামনের রাস্তাটা। রাস্তার দুধারে সার দেওয়া লম্বা লম্বা সবুজ গাছগুলো যেন সবাইকে অভ‍্যর্থনা জানাচ্ছে। এরপর যেদিন বাড়িটিতে আসি বিকেলবেলা বেশ অন‍্যরকম লেগেছিল। তখন রোদ্দুর যেন খেলা করছে আপনমনে। বাড়িটাতে ঢুকতেই অদ্ভুত একটা গন্ধ পেয়েছিলাম সেদিন, আমার ছোটবেলায় এরকম একটা সুন্দর গন্ধের সঙ্গে আমার বেশ পরিচিতি থাকলেও কিসের গন্ধ তা বলতে পারবো না; তবে তা ছিল বেশ নষ্টালজিয়া মেশা

চেক-ইন প্রাগ

Image
         2019-এর মার্চ মাসে আবার আমরা সপরিবারে বেরিয়ে পড়লাম  ইউরোপের দু-একটি শহর দেখতে। এবারের গন্তব্য  প্রাগ্, ব্রাতিস্লাভা এবং বুদাপেস্ট। যাত্রা শুরু হল প্রাগ দিয়ে। এখানে বলে রাখা ভালো গত দুবছর ধরে আমি ব্রাসেল্সে(বেলজিয়াম) থাকি, স্বামীর কর্মসূত্রে। আমি আমার স্বামী ও আমাদের কন‍্যা। গত দুবছর এখানে থাকার সুবাদে বেশ কিছু জায়গা, বলা ভালো দেশ দেখার সুযোগ ঘটেছে। ঐ সেনজেন ভিসার সুযোগ কাজে লাগানো বলা যায়। এর আগে  নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও আরো বেশ কয়েকটি দেশ দেখলেও প্রাগ অর্থাৎ চেক-এ যাওয়ার কথা খুব একটা আমাদের কারোরই মনে হয়নি। কিন্তু ঐ আজকাল আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া যেমন অনেক অজানাকে জানতে সাহায্য করে তেমনি প্রাগ যাওয়ার ইচ্ছেটাও জাগিয়ে তুলল। বেশ কিছু  পরিচিত-এর প্রাগ ভ্রমণের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে গত তিন-চারমাস ধরে মনটা বেশ 'প্রাগ প্রাগ' করছিল। তাই এবার মনকে প্রাধান্য দিয়েই প্রাগ- বুদাপেষ্ট এর প্ল‍্যান করা হল মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। এর আগে যাওয়াটা খুব একটা সমীচিন মনে হল না, প্রাগের ভৌগলিক অবস্থানের জন‍্য। ওখানে বেশ ঠান্ডা থাকে। তাই প্ল‍্যানমতো আমরা ব্রাসেল্

মোহময়ী গিথোর্ণ ( Charming Giethoorn)

Image
                এবারের আমাদের গন্তব্য  গিথোর্ণ(Giethoorn)। হল‍্যান্ড বা নেদারল্যান্ডসের উত্তরের একটি ছোট্ট গ্রাম। চারদিক জলবেষ্টিত এই গ্রামটিকে 'ভেনিস অব নর্থ'(Venice of North)ও বলা হয়। অত‍্যন্ত ছোট্ট একটি গ্রাম এই গিথোর্ণ। মাত্র 2600 লোক  এখানে বাস করেন। এখানে যোগাযোগ তথা যাতায়াত ব‍্যবস্থার একটিই মাধ্যম - জলপথ। আর আছে ছোট ছোট কাঠের সাঁকো। খুব সুন্দর  সে দৃশ্য; দুদিকে  মনোরম কটেজ আর মাঝে বয়ে চলেছে ক‍্যানাল, এপার থেকে ওপারে যেতে গেলে পেরোতে হবে কাঠের ব্রীজ। আর এখানে কোনো গাড়ি চলে না, তাই বলা হয় 'car free village '। গিথোর্ণ-এর পটারি হাউস      তাই অগাস্ট মাসের এক শনিবার আমরা ঠিক করলাম  এহেন সুন্দর এই গ্রামটি দেখে আসা যাক। ব্রাসেল্স থেকে যেতে সময় লাগে ঘন্টা চারেক। এবার আর আমরা একা নই, গেলাম এখানকারই একটি ভারতীয় ট‍্যুরিস্ট গ্রুপের সাথে। এখন এখানে গ্রীষ্মকাল এবং খুব মনোরম আবহওয়া। আমার গত তিন  বছর  এই ব্রাসেল্সে থাকার সুবাদে  বলতে পারি 2019 এর summer/ গ্রীষ্মটা সত্যিই বেশ ভালো আগেরগুলোর তুলনায়। এই সময়টা  তাই খুব ভালো করে বেড়ানো যায়। আমরাও সেই সুন্দর আবহাওয়ারই সুযোগ নিলাম বলা

করোনা'র যাতনা

Image
           উফফ! ধুর ভাল লাগে না। এই একটা শব্দ যেন জীবনটা পুরো শেষ করে দিল। আরে হ‍্যাঁ রে বাবা ঐ করোনার কথাই বলছি। সেই ছোট্ট বেলা থেকে এই শব্দটির সাথে পরিচিতি। না করোনার ছোটবেলা বলছি না, আমাদের ছোটবেলা। ছোট থেকে আমরা কয়েকটা জিনিস,  না বলা ভালো কয়েকটা শব্দ (নেতিবাচক) শুনে প্রত‍্যেকেই বড় হয়েছি। তার মধ্যে করোনা বা কোরোনা একটি  অন‍্যতম। এটা করোনা, ওটা করোনা, সেটা করোনা। সত্যি  বলছি সেগুলো শুনতে তখনো ভালো  লাগত না, এখনো লাগে না। বড্ড বিরক্তিকর একটি শব্দ এই করোনা। তবু তাকে বর্জন করে চলা যায়। কিন্তু  2020 তে দাঁড়িয়ে আমরা সারাক্ষণ যে 'করোনা' শুনছি তাকে কি বর্জন করা যায়; না যায় না, এই ভয়াবহ, আগ্রাসী একটি ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই  তো আমাদের চলতে হচ্ছে  বা ভবিষ্যতেও হবে। সত্যিই এ এক বিভীষিকা। লকডাউনে ব্রাসেল্স           গত তিন বছর যাবত্ আমি ব্রাসেল্সের বাসিন্দা, অভিবাসী বলাই শ্রেয়। এখানে মার্চ মাসের প্রথম দিন থেকেই করোনার অবাধ  যাতায়াত  শুরু হয়ে গেছে। এর আগে চীনে এই করোনার প্রভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা নিউজে দেখেছি কিন্তু  তখনো বোধহয় আমরা তার  ভয়াবহতা বুঝে উঠতে  পারিনি।            ইউরোপের পা